বাংলাদেশে নারীদের সক্রিয়তা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তারা নানা ধরনে সহিংসতার শিকারও হচ্ছেন। বিশেষ করে নারী নির্যাতন মামলার বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার যে নির্দেশনা রয়েছে, তা ৫ বছরেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বর্তমানে দেশের ৩২ হাজার ৯৭২টি মামলা ৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন রয়েছে।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারাধীন মামলা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ১৩৪টি, এবং তদন্তাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ১৮৩টি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে ১৮০ দিনের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়ার পরও, মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বিচার বিলম্বিত হচ্ছে।
এছাড়া, নানা কারণে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ায় অনেক সময় সাক্ষী উপস্থিত হন না, অথবা মামলা আপস হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মূল কারণ হিসেবে পদ্ধতিগত জটিলতা এবং আইনগত দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন।
নারী অধিকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এসব মামলার অগ্রগতি তদারকি করা, ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা প্রদান এবং বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে ঢাকা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, অনেক ক্ষেত্রে চার্জশিট দিতে দেরি হয় এবং সাক্ষীরা নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হন না, যা মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণ হয়।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেনও এ বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপের অভাবের কথা বলেছেন।
উল্লেখযোগ্য যে, ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার জন্য আইন মন্ত্রণালয় একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত এবং ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার জন্য আইন সংশোধন করা হচ্ছে।