চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স আব্দুল হাকিম পিন্টুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের দুই গ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর আলী এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদ রানা টিপুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছে। ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেন শহীদ রানা টিপু, যা ওমর আলীর সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েনের সূত্রপাত ঘটায়। ২০২২ সালের নির্বাচনে একই ঘটনা পুনরাবৃত্তি হলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়।
গত ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন পিন্টু। চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ২৩ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়। ২৪ জানুয়ারি নিহতের বাবা মো. হুমায়ুন সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যেখানে শহীদ রানা টিপুসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে, গত ৪ মার্চ নিহতের স্ত্রী পারভিন বেগম আদালতে আরেকটি মামলা করেন, যেখানে প্রধান আসামি করা হয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জুয়েল রানাকে।
হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এক পক্ষ পিন্টুর বাবার মামলাকে সমর্থন জানালেও, অন্য পক্ষ তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। নিহতের স্ত্রী অভিযোগ করেন, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে এবং প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, পিন্টুর বাবা দাবি করেন, আসামিরা তার ছেলেকে হত্যা করে তার স্ত্রীকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে নতুন মামলা করিয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।