বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “যারা প্রকৃতপক্ষে জনগণের পক্ষে রাজনীতি করে, তারা কখনো পালায় না।” তার মতে, এর অন্যতম উদাহরণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। “অত্যাচার, নির্যাতন, বন্দিত্ব—এত প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি দেশ ছাড়েননি, জনগণের পাশে থেকেছেন। এখানেই বিএনপি আর তাদের মধ্যে পার্থক্য।”
আজ (শুক্রবার) শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, “বিগত বছরগুলোতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী গুম হয়েছেন, ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন। তাদের রক্তের বিনিময়ে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে উঠেছে, যার মাধ্যমে সেই ভয়ঙ্কর দমন-পীড়নকারী শাসক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এক ধাপ এগিয়েছি, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটছি। আমাদের দাবি স্পষ্ট—অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। গত ১৭ বছর ধরে রাজনৈতিক দল ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংসের চেষ্টা হয়েছে। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।”
রিজভী বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে স্থানীয় সরকারসহ সব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিতর্কের প্রয়োজন নেই। জনগণ যখন নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করবে, তখন তারাই এসব সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লড়াই শুধু রাজপথে নয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যও। আইনের শাসন, মানবিক সাম্য, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের আন্দোলন। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব জনগণকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সর্বজনস্বীকৃত নির্বাচন উপহার দেওয়া।”
বর্তমান প্রজন্মের ভোটাধিকার নিয়ে তিনি বলেন, “আজকের ১৮ বা ২১ বছর বয়সীরা কখনও সুষ্ঠু ভোট দিতে পারেনি। কারণ গত ১৭ বছর ধরে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে নির্বাচন কমিশনকে বিকল করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করাই এখন সরকারের প্রধান দায়িত্ব।”
রিজভী বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে ২১ ফেব্রুয়ারি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা নব্বইয়ের গণআন্দোলন সফল করেছি, এরশাদের স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছি। সেই ধারাবাহিকতায় ১৭ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা ফ্যাসিস্ট শাসকেরও পতন হয়েছে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসিরুদ্দিন অসীম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।