বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে গত ২৪ ঘণ্টার অন্যতম আলোচিত নাম প্রান্তিক নওরাজ নাবিল। ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি, যদিও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের হয়ে ৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এই তরুণ ক্রিকেটার।
নাবিলের আকস্মিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা আলোচনা চলছিল। কেউ কেউ মনে করেছিলেন, কোনো দল, ক্লাব বা কোচের সঙ্গে মতবিরোধের কারণেই তিনি ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেই জানালেন প্রকৃত কারণ—শারীরিক অসুস্থতা।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তার ‘ডাস্ট অ্যালার্জি’ রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ধুলোবালি থেকে দূরে থাকতে হবে, নাহলে তার শারীরিক অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের যেকোনো মাঠেই ধুলোর পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে ক্রিকেট চালিয়ে গেলে তার স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। তাই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েই খেলা ছাড়ার ঘোষণা দেন তিনি।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের হয়ে নাবিল ৬টি ম্যাচ খেলেন, যেখানে একটি ম্যাচে ফিফটি করেন (৭৭ বলে ৬০ রান)। তবে বাকি ম্যাচগুলোতে ব্যাট হাতে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। ফলে একাদশে জায়গা হারান তিনি। এছাড়া, তিনি ৭টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ ও ২৮টি ‘লিস্ট এ’ ম্যাচ খেলেছেন।
নাবিলের মতো আরও অনেক ক্রিকেটার আগেও অল্প বয়সে খেলা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্রিকেট ছাড়ার ঘটনা বিরল। তার আগে অনেকে ফর্মহীনতা, ইনজুরি কিংবা ভালো সুযোগের অভাবে ক্রিকেট থেকে সরে গেছেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে ওয়াসেল উদ্দীন, নাহিদ, পারভেজ আহমেদ, ইমরান রহিম লালুর মতো অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারও একসময় আলোচনায় ছিলেন। তবে তারা নীরবেই ক্রিকেট ছাড়েন এবং কেউ কেউ বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছেন। নাবিলের ক্ষেত্রেও হয়তো সময়ের সঙ্গে তার বিদায়ের খবর অনেকের স্মৃতি থেকে মুছে যাবে। তবে তার শারীরিক অসুস্থতা তাকে বাধ্য করেছে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য অবশ্যই দুঃখজনক।