বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ওয়ানডে ফরম্যাটে তুলনামূলকভাবে ভালো পারফর্ম করে, তবে বড় ইনিংস খেলার ক্ষেত্রে এখনও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। দলের ব্যাটাররা উইকেটে বেশিক্ষণ টিকে বড় স্কোর গড়ার মানসিকতা এখনো পুরোপুরি তৈরি করতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের ইনিংসগুলো বেশিরভাগ সময় ২০-৩০ রানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, আর যারা ফিফটি করেন, তারা খুব কমই সেটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেন। ফলে তিনশোর বেশি রান করা বাংলাদেশের জন্য এখনো বিরল ঘটনা।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই চিত্র কিছুটা বদলেছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনটি ওয়ানডেতে ৩০০+ রান করেছে বাংলাদেশ দল। এমনকি সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচেও টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ৩২১ রান। সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলীর বড় ইনিংসের ওপর ভর করেই সেই স্কোর গড়ে বাংলাদেশ।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে, যেখানে সাধারণত ৩০০+ রান হয়। চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজেও প্রতিটি ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৩০০ বা তার বেশি রান হয়েছে। তাই বাংলাদেশ যদি আগে ব্যাট করে, তবে ৩০০ রান করা জরুরি হয়ে উঠবে, আর পরে ব্যাট করলে প্রতিপক্ষকে তিনশোর নিচে আটকে রাখার চ্যালেঞ্জ থাকবে।
দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছেন, এই বড় স্কোর গড়ার ব্যাপারে দলের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব কাজ করছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য দেশ ছাড়ার আগে তিনি বলেন, “এ ধরনের টুর্নামেন্টে বাড়তি চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। আমি মনে করি, পাকিস্তানের উইকেট ৩০০+ স্কোর করার উপযোগী হবে। আগে ব্যাট করলে আমাদের সে লক্ষ্য নিয়েই খেলতে হবে, আবার বোলিং করলে এমন স্কোর ডিফেন্ড করার মানসিকতাও থাকতে হবে।”
তবে সহআয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাতে উইকেটের চরিত্র আলাদা হতে পারে। শান্ত মনে করেন, দুবাইয়ে ২৬০-২৮০ রানের স্কোর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে। তিনি বলেন, “সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন, তবে অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, দুবাইয়ের উইকেট কম রানের হয়। নির্দিষ্ট দিনে পরিস্থিতি বুঝে আমাদের পরিকল্পনা সাজাতে হবে।”
বাংলাদেশ দলের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ থাকলেও শান্তর মন্তব্যে বোঝা যায়, দলের ভেতর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। এবার দেখার বিষয়, বাস্তবে মাঠে সেই পরিকল্পনার কতটা বাস্তবায়ন করতে পারে টাইগাররা।