শেষ ওভারে ১৫ রান দরকার, অথচ স্বীকৃত ব্যাটার নেই! এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতেও দারুণ এক জয় তুলে নিয়ে বিপিএলের ফাইনালে জায়গা করে নিল চিটাগং কিংস। খুলনা টাইগার্সকে ২ উইকেটে হারিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টানটান উত্তেজনার এক ম্যাচ দেখল দর্শকরা। খুলনার অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ শেষ ওভারে বল তুলে দেন তরুণ মুশফিক হাসানের হাতে। প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন আরাফাত সানি। এরপর দ্বিতীয় বলে দুই রান নিয়ে জয়ের আশা জাগিয়ে তোলেন তিনি। তখন প্রয়োজন ৪ বলে ৯ রান।
তৃতীয় বলে আলিস আল ইসলাম রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়লেও তার জায়গায় নেমে চমৎকার এক বাউন্ডারি মারেন শরিফুল ইসলাম। শেষ দুই বলে ৪ রান দরকার থাকলেও পঞ্চম বলে উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে চিটাগং। তবে শেষ বলে নাটকীয়ভাবে ফিরে আসেন আলিস এবং বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
উঠানামার ম্যাচ, শেষে দুর্দান্ত জয়
ফাইনালে যেতে চিটাগংয়ের লক্ষ্য ছিল ১৬৪ রান। ওপেনার খাজা নাফে ভালো শুরু করলেও পারভেজ হোসেন ইমন ও গ্রাহাম ক্লার্ক দ্রুতই হাসান মাহমুদের শিকার হয়ে ফিরলে চাপে পড়ে দলটি। এরপর দুই পাকিস্তানি ব্যাটার খাজা নাফে ও হুসাইন তালাত ৪৮ বলে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান।
কিন্তু ২৫ বলে ৪০ রান করা তালাত ও শামীম পাটোয়ারিকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। অন্যদিকে, ৪৬ বলে ৫৭ রান করা নাফে মুশফিক হাসানের বলে বোল্ড হয়ে গেলে ১২ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে হঠাৎই খেই হারিয়ে ফেলে চিটাগং।
অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনও সুবিধা করতে পারেননি। তবে শেষদিকে আরাফাত সানি (১৩ বলে ১৮) ও আলিস আল ইসলামের (৭ বলে ১৭*) দারুণ ব্যাটিং দলকে এক অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয়।
হেটমায়ারের ঝড়ো ইনিংসে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ খুলনার
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপদে পড়ে খুলনা টাইগার্স। মাত্র ৪২ রানেই ৪ উইকেট হারায় দলটি। অধিনায়ক মিরাজ (২), অ্যালেক্স রস (০) ও আফিফ হোসেন (৮) ব্যর্থ হলে চাপ আরও বাড়ে।
নাইম শেখ ২২ বলে ১৯ রান করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। এরপর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও সিমরন হেটমায়ার ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলেন। অঙ্কন ৩২ বলে ৪১ রান করে আউট হলেও হেটমায়ার ৩৩ বলে ৬৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন। শেষ ৫ ওভারে ৭৬ রান যোগ করে খুলনা ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায়।
বোলারদের পারফরম্যান্স
চিটাগং কিংসের পেসার বিনুরা ফার্নান্ডো ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। অন্যদিকে, খুলনার হাসান মাহমুদ ও মুশফিক হাসান ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। তবে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় চিটাগং কিংসের জয় নিশ্চিত হয় এবং তারা ফাইনালের টিকিট পায়।