১৭ জানুয়ারি, ২০২৫-এ মুক্তি পাওয়া কঙ্গনা রানাউত পরিচালিত এবং অভিনীত চলচ্চিত্র ইমারজেন্সি নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে তীব্র বিতর্ক চলছে। ছবিটি ১৯৭৫ সালের ভারতে জরুরি অবস্থার সময়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যেখানে কঙ্গনা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থাপনা বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
ছবিতে শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋষি কৌশিক। বিতর্কিত একটি দৃশ্যে দেখা যায়, তিনি হিন্দিতে একটি বক্তৃতা দিচ্ছেন, যেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের প্রতি চিরকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখা যায়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের একটি দৃশ্য অতিরঞ্জিত ও অসম্মানজনক বলে সমালোচিত হয়েছে।
এই উপস্থাপনা নিয়ে বাংলাদেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সমালোচকরা এটিকে ঐতিহাসিক সত্য বিকৃত করার অভিযোগ এনেছেন এবং দাবি করেছেন যে, এটি ভারতের পক্ষে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বর্ণনা প্রচারের উদ্দেশ্যেই তৈরি। বিরোধী দলগুলোর কিছু সদস্য অবশ্য এটিকে বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পরোক্ষ সমালোচনা হিসেবে দেখছেন। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই চিত্রায়নকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহ্যকে খাটো করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
বিতর্কের মধ্যেও, ছবিটি বক্স অফিসে সফল হতে পারেনি। ৬০ কোটি রুপির বাজেটে নির্মিত এই চলচ্চিত্র মাত্র ১৮ কোটি রুপি আয় করেছে। কঙ্গনাকে ছবির অর্থায়নের জন্য তার বাড়ি বিক্রি করতে হয়েছে বলে জানা গেছে। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন অনুপম খের, শ্রেয়াস তালপাড়ে এবং মিলিন্দ সোমান।
এই বিতর্ক প্রমাণ করে যে, বঙ্গবন্ধুর মতো ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে ভুল উপস্থাপনা শুধু ঐতিহাসিক সত্যকে বিকৃতই করে না, বরং দুই দেশের মধ্যে আবেগ ও রাজনৈতিক উত্তেজনাও সৃষ্টি করে।