রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণ দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পরিবেশ অধিদফতর জানিয়েছে, ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। নাগরিকদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার এবং অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে বৃষ্টি কম হওয়ায় বাতাসে ধুলিকণা ও ধোঁয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বায়ুমান মারাত্মকভাবে নেমে যায়। পরিবেশবিদদের মতে, ইটভাটার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া এবং বিভিন্ন ধরনের পোড়া বস্তুর ধোঁয়া বায়ুদূষণের মূল কারণ।
ঢাকার স্কুলগামী শিশুরা এবং সাধারণ পথচারীরা বায়ুদূষণের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। অনেকেই শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা, হাঁচি-কাশি এবং ঠান্ডাজনিত অসুখের শিকার হচ্ছে। রাজধানীর একজন মা জানিয়েছেন, তার সন্তান প্রায়ই ঠান্ডাজনিত অসুখে ভোগে এবং বাড়ির অন্যান্য সদস্যেরও একই সমস্যা দেখা দেয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডে যেখানে বায়ুমানের গড় মাত্রা ৩৫ থাকা উচিত, সেখানে ঢাকার গড় বায়ুমান প্রতি বছর ৮০ ছাড়িয়ে যায়। ২০২৪ সালে এ মান ছিল ৮৩.৯। চলতি বছর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পরিবেশ অধিদফতর জানিয়েছে, বায়ুদূষণ রোধে ২০২৪-২০৩০ মেয়াদে একটি জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় ইটভাটা বন্ধসহ নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হবে।
আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ২২৩ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় সরকার ও জনগণের যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।
সমস্যা নিরসনে কার্যকর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক পরিধান ও অপ্রয়োজনীয় বাহিরে যাওয়া পরিহার করা উচিত। বায়ুদূষণের লাগাম টানতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।