একজন ফুটবলার সাধারণত কত বছর পর্যন্ত শীর্ষ পর্যায়ে খেলে যেতে পারেন? বেশিরভাগ ফুটবলারই ৩৩-৩৪ বছর বয়সের পর ধীরে ধীরে গতি হারান, ৩৬ বছর পর্যন্ত টিকে থাকলেও সেটা অনেকের জন্য কঠিন। ৩৮ বছর পার করে খেলার নজির তো আরও কম। কিন্তু ৪০ বছর বয়সেও যদি কেউ তরুণদের মতো উদ্যম নিয়ে মাঠে দাপিয়ে বেড়ান, সেটাকে তো অবিশ্বাস্যই বলতে হয়!
ঠিক এমনই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ গড়ে চলেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বয়স ৪০ পেরিয়ে গেলেও মাঠে তার গতি ও ধারাবাহিকতা এতটুকু কমেনি। জাতীয় দল হোক বা ক্লাব ফুটবল, প্রতিটি ম্যাচেই তিনি খেলছেন পূর্ণ উদ্যমে, যেন ২৫-২৬ বছর বয়সী কোনো ফুটবলার!
গত বুধবার নিজের ৪০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন রোনালদো। এত বয়সেও তার পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মুগ্ধ করছে। অনেকেই বলছেন, রোনালদো নিজেকে ফুটবল ইতিহাসের নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি লা সেক্সটা’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কি নিজেকে সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন মনে করেন? জবাবে রোনালদো বলেন, তার ট্রফির সংখ্যা ও গোল স্কোরিং রেকর্ডই বলে দেবে, তিনি কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন।
তবে তার এই আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। অনেকে মনে করেন, রোনালদোর মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা বেশি। কিন্তু তার সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ রিও ফার্ডিনান্ড এতে মোটেও একমত নন। বরং তিনি মনে করেন, রোনালদো আসলেই ব্যতিক্রমী এক খেলোয়াড়, যার একাগ্রতা ও নিষ্ঠা তাকে বিশ্বসেরা করেছে।
ফার্ডিনান্ড বলেন, ‘অনেকেই বলে থাকেন, রোনালদো সেরা গোলস্কোরার, সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া খেলোয়াড়, দেখতে আকর্ষণীয়—এসব কারণে তিনি কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক। কিন্তু আমি বলব, এসব ধারণা পুরোপুরি ভুল। রোনালদো আসলে অন্য ধাতুতে গড়া একজন খেলোয়াড়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোনালদো সবসময় চান, মানুষ তাকে মনে রাখুক। এমন কিছু নেই যা তিনি করেননি নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য। তিনি ফুটবলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।’
রোনালদোর ৪০তম জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তিনি বলেন, ‘সর্বকালের সেরাদের একজন হওয়ার মতো সব যোগ্যতাই রোনালদোর মধ্যে রয়েছে।’
রোনালদো নিজেও জানেন, বয়স তার জন্য কেবল একটি সংখ্যা। কঠোর পরিশ্রম, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও অদম্য মানসিকতার কারণে তিনি এখনও ফুটবল বিশ্বে রাজত্ব করছেন। ৪০ বছর বয়সেও তরুণদের সঙ্গে সমান তালে খেলে যাওয়া যে খুব কম ফুটবলারের পক্ষেই সম্ভব, সেটা বারবার প্রমাণ করে চলেছেন এই পর্তুগিজ সুপারস্টার।