এপ্রিল মাসে ইন্দোনেশিয়ায় এএইচএফ কাপ হকি টুর্নামেন্ট সামনে রেখে হকি ফেডারেশন একটি প্রাথমিক খেলোয়াড় তালিকা তৈরি করেছে। তবে এই তালিকায় ৩২ বছরের বেশি বয়সী কোনো খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কর্নেল (অব.) রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ৩২ বছরের বেশি বয়সী খেলোয়াড়দের দলে না রাখার সিদ্ধান্তটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বাংলাদেশের হকির অন্যতম তারকা রাসেল মাহমুদ জিমি জাতীয় দলের বাইরে থেকে যাবেন। ৩৭ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় দীর্ঘদিন ধরে তার পারফরম্যান্স এবং ফিটনেস দিয়ে নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করে এসেছেন।
এর আগে বাংলাদেশের হকিতে ৩২ বছরের বেশি বয়সেও অনেক খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলেছেন। ফলে হঠাৎ বয়সের এমন সীমাবদ্ধতার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের ধারণা, এই নীতির পেছনে হয়তো জিমির মতো সিনিয়র খেলোয়াড়দের বাইরে রাখার উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
ফেডারেশন আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি খেলোয়াড়দের পরীক্ষা নেয়ার কথা জানিয়েছে। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই জিমির মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে বিবেচনার বাইরে রাখা ক্রীড়াপ্রেমীদের ক্ষুব্ধ করেছে। সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে বলেছেন, “৩২ বছরের নীতিটি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিষয়টি আমরা পুনর্বিবেচনা করব।”
সাবেক হকি তারকা রফিকুল ইসলাম কামাল এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “জাতীয় দলে খেলার মানদণ্ড হলো পারফরম্যান্স এবং ফিটনেস। বয়স কখনোই বিষয় হতে পারে না। এটি খেলাটির জন্য ক্ষতিকর হবে। এমনিতেই হকিতে খেলোয়াড়রা যথেষ্ট সুবিধা পান না। এর ওপর বয়সের কারণে তাদের সম্মান কেড়ে নেয়া হলে খেলাটির আরও ক্ষতি হবে।”
বিশ্বের অন্যান্য খেলাধুলার উদাহরণ টেনে ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স কখনো একজন খেলোয়াড়ের দক্ষতা পরিমাপের মানদণ্ড হতে পারে না। যেমন মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এখনও জাতীয় দলে খেলে যাচ্ছেন, মেসি এবং রোনালদো প্রায় ৪০ বছর বয়সেও বিশ্ব ফুটবলে খেলছেন। এমনকি দাবার কিংবদন্তি রাণী হামিদ ৮২ বছর বয়সেও বিশ্ব আসরে সাফল্য দেখিয়েছেন।
জাতীয় দলের জন্য কোচ নির্বাচন প্রক্রিয়া এখনও চলছে। তাই নতুন কোচ দায়িত্ব নিয়ে কিভাবে দল সাজাবেন, সেটি দেখার বিষয়। তবে বয়সের এই সীমাবদ্ধতার ভাবনা জাতীয় হকির অগ্রগতির পথে অন্তরায় হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।