সম্প্রতি একদিন আমার স্ত্রী নিউমার্কেটে শপিং শেষে আতঙ্কিত হয়ে আমার কাছে এসে বললেন, তিনি আর কখনো একা বাইরে যাবেন না। মার্কেটে এক মহিলা তার সামনে এসে জুতা দেখিয়ে বলছিলেন, “আপা, দেখুন তো কেমন হয়েছে।” এরপর, আমি তাকে শয়তানের নিশ্বাস (ডেভিলস ব্রেথ) সম্পর্কে যা জানিয়েছিলাম, তা কাজে আসল।
এই ধরনের ঘটনাগুলোর ব্যাপারে আমি আগে থেকেই সাবধান করেছি। শয়তানের নিশ্বাস বা স্কোপোলামিন (Scopolamine), যা ব্ল্যাক ম্যাজিকের অংশ হিসেবে পরিচিত, মানুষের মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রেখে অপরাধীদের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসে। এটি সাধারণত চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হলেও অপরাধীরা এর সাহায্যে মানুষের স্বাভাবিক চিন্তাভাবনাকে অক্ষম করে এবং চুরি বা ছিনতাই করে থাকে।
এটি মূলত একটি শক্তিশালী রাসায়নিক, যা কিছু গাছের পাতা এবং বীজ থেকে প্রাপ্ত হয়। কিছু অপরাধী এটি মানুষের শ্বাসনালীতে মিশিয়ে দেয়, যার ফলে ব্যক্তি সহজেই বিভ্রান্ত এবং দিশাহীন হয়ে পড়ে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে হত্যার সময় স্কোপোলামিন ব্যবহারের প্রমাণ মেলে।
স্কোপোলামিনের ইতিহাস এবং এর অপরাধমূলক ব্যবহার দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি “ট্রুথ সিরাম” হিসেবে ব্যবহার করা হতো, যার ফলে কোনো ব্যক্তিকে কথিত সত্য বলানো সহজ হত।
এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কীভাবে এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারি? প্রথমত, একে অপরকে সচেতন করা এবং স্কোপোলামিনের প্রভাব সম্পর্কে জানানো জরুরি। এটি মানব মস্তিষ্কের কাজকে ধীর করে দেয়, ফলে শিকারী সহজেই তার শিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি যদি কখনো ঘটেও, দ্রুত সাহায্য নেয়া এবং নিরাপদ স্থানে যাওয়া উচিত।
স্কোপোলামিনের প্রভাবের লক্ষণগুলো হলো বিভ্রান্তি, স্মৃতিভ্রংশ, এবং এক ধরনের বশীকরণ অনুভূতি। তাই, জনসমাগম স্থলে সতর্ক থাকতে হবে এবং নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।