ভারতীয় ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকার আরও একবার প্রমাণ করলেন তার অসামান্য কীর্তির মর্যাদা কখনও ফুরায় না। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই তাকে কর্নেল সিকে নাইডু আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করেছে। মুম্বাইয়ে আয়োজিত বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মান জানানো হয়, যা তার দীর্ঘ দুই দশকের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রতি এক অনন্য শ্রদ্ধার প্রতিফলন। বিসিসিআইয়ের দেওয়া এই স্বীকৃতি তিনি পেলেন ৩১তম ক্রিকেটার হিসেবে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা শচিন টেন্ডুলকার তার ক্যারিয়ারে এমন সব রেকর্ড গড়েছেন, যা আজও বহু ক্রিকেটারের কাছে অনুপ্রেরণা। ২০০টি টেস্ট ও ৪৬৩টি ওয়ানডে খেলা এই ব্যাটিং জাদুকরের সংগ্রহে রয়েছে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক রান এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ সেঞ্চুরি করার অবিস্মরণীয় রেকর্ড। ২০১৩ সালে ক্রিকেটকে বিদায় বললেও তার অবদান এখনও ভারতীয় ক্রিকেটে প্রজ্বলিত।
এই অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হয়েছেন আরও কয়েকজন কৃতী ক্রিকেটার। ২০২৩-২৪ মৌসুমের সেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ, যিনি পলি উমরিগড় পুরস্কার জিতেছেন। একই বিভাগে নারী ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার অর্জন করেছেন স্মৃতি মান্ধানা। তিনি মেয়েদের ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। বুমরাহ সম্প্রতি আইসিসি বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন এবং তার দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শিরোপা জয় করে।
বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন ভারতের অন্যতম সফল স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। ৫৩৭ উইকেট শিকার করে ভারতের টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় নাম লেখানোর পর গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। অন্যদিকে, সেরা আন্তর্জাতিক অভিষেকের পুরস্কার পেয়েছেন সরফরাজ খান, যিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে এই স্বীকৃতি অর্জন করেন। নারী ক্রিকেটে এই পুরস্কার পেয়েছেন আশা সুবহানা।
শচিন টেন্ডুলকারের এই আজীবন সম্মাননা শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্যের স্বীকৃতিই নয়, এটি ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি তার অবিস্মরণীয় অবদানের এক অনন্য সম্মাননা। ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তিনি চিরকালই ‘লিটল মাস্টার’ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।