মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে তীব্র সমালোচনায় পড়েছে বর্তমান ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যুদ্ধ যেহেতু বাইডেনের সময়েই শুরু হয়েছে তাই বিশ্বের অনেকই আশা করছেন ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর তা থামাতে জোরালো পদক্ষেপ নেবেন। ট্রাম্প অবশ্য এরই মধ্যে দাবিও করেছেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে সক্ষম হবেন তিনি।
অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী, তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্তে তিনি টেবিলে বসতে চান। কি এমন শর্ত যা মানলে যুক্ত থামাতে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত পুতিন?
পুতিনের প্রথম শর্তই হলো, ইউক্রেনের যসব অঞ্চল এরই মধ্যে রাশিয়া দখল করেছে তা নিয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না। অর্থাৎ অধিকৃত অঞ্চলগুলো রাশিয়ার অধিনেই থাকবে। পুতিনের দ্বিতীয় শর্ত হলো ইউক্রেনকে ন্যাটোতে নেয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে। অর্থাৎ ইউক্রেনে ন্যাটো কোন ঘাটি বানাতে পারবে না।
এছাড়া পুতিনের দেয়া শর্তের মধ্যে আরোও রয়েছে, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখতে হবে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ট্রাম্প যদি মধ্যস্থতা করেন, তবে তারা সম্মুখযুদ্ধ বন্ধে সম্মত হতে পারে, তবে ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলের ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এদিকে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলমান যুদ্ধের পর ইউক্রেনের প্রায় ১৮ শতাংশ অঞ্চল এখন রাশিয়ার দখলে। এর মধ্যে ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশ রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুতিন জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে তা বাস্তব পরিস্থিতির ভিত্তিতে হবে ও ইউক্রেনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে দেওয়া হবে না।
যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি হলে, ইউক্রেনকে পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর বাস্তবতা মেনে নিতে হবে, তা হলো—রাশিয়ার জয় ঠেকানো সম্ভব নয়, যদিও পশ্চিমারা ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আসছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ট্রাম্প কি সত্যিই তাহলে পুতিনের শর্ত মেনে নিবে?
শর্ত মানলে আধিপত্য বজায় থাকবে রাশিয়ার না মানলে চলতে থাকবে যুদ্ধ। ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসে ট্রাম্প কোনটিকে বেছে তাই দেখার অপেক্ষায়।