‘মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’—এই স্লোগানটি সাম্প্রতিক আন্দোলনগুলোর মাধ্যমে আবারও আলোচনায় এসেছে। তবে এর শেকড় বহু পুরোনো এবং বৈশ্বিক ইতিহাসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এই স্লোগানের জন্ম ১৮৬৮ সালে, যখন কিউবা স্পেনের উপনিবেশ থেকে মুক্তির জন্য লড়াই করছিল। তখন এটি ছিল ‘স্বাধীনতা অথবা মৃত্যু’। পরবর্তী সময়ে, ১৯৫৯ সালে ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে বিপ্লবের মাধ্যমে কিউবায় বাতিস্তা সরকারের পতন ঘটে। কিন্তু সেখানেই সংগ্রামের সমাপ্তি হয়নি। ১৯৬০ সালে হাভানার সমুদ্রবন্দরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ফিদেল কাস্ত্রো ঘোষণা দেন, বিপ্লব রক্ষার জন্য তাঁরা জীবন দিতেও প্রস্তুত। তখন থেকেই ‘স্বদেশভূমি অথবা মৃত্যু’ স্লোগানটি বিপ্লবীদের অন্যতম প্রতীক হয়ে ওঠে।
১৯৬৪ সালে জাতিসংঘে দেওয়া এক ভাষণে চে গুয়েভারা এই স্লোগানটি আবার উচ্চারণ করেন, যা বৈশ্বিক বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে যায়। লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা এবং এশিয়ায় উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনগুলোর অংশগ্রহণকারীরা এই স্লোগানকে তাঁদের সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনেও এই স্লোগানের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা গেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণরা তাদের প্রতিবাদে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান তুলে ধরেছিল, যার মধ্যে ‘মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ অন্যতম। ইতিহাস বলে, স্লোগান কেবল কথার খেলা নয়, বরং এটি প্রতিটি আন্দোলনকারীর চেতনার গভীর প্রতিফলন।
কিউবার বিপ্লবীরা এই স্লোগান দিয়ে নতুন শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। বর্তমান সময়ে যারা এই স্লোগান ব্যবহার করছেন, তাঁদের প্রতিজ্ঞা কী হবে? ইতিহাস দেখিয়েছে, স্লোগান তখনই সফল হয়, যখন তা বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হয়।