সম্প্রতি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্র এবং আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি আফগান তালেবান নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ভারতের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। গত এক বছর ধরে ভারত তালেবানের সঙ্গে ধাপে ধাপে সম্পর্ক উন্নয়ন করেছে, তবে এই বৈঠককে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। আফগানিস্তানে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে ভারত, এবং বৈঠকে আঞ্চলিক উন্নয়ন, বাণিজ্য, মানবিক সহায়তা, স্বাস্থ্য এবং শরণার্থী সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে অবশ্য কিছু বিষয় ছিল যে প্রকাশ্যে আসেনি, কিন্তু আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় কিছু পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
তালেবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নয়ন বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আফগানিস্তানে পাকিস্তান সাম্প্রতিক একটি বিমান হামলা চালিয়েছে, যার পর ভারতের সঙ্গে তালেবানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতের ভূরাজনৈতিক কৌশলগত স্বার্থের অংশ, কারণ ভারত তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় যাতে আঞ্চলিক ক্ষমতাবলম্বী পরিস্থিতিতে তারা নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে। আফগানিস্তান ও তার সরকারকে অবজ্ঞা করা ভারতের জন্য আরেকটি বিকল্প সমাধান নয়।
তালেবানের শাসনক্ষমতা গ্রহণের পর ভারত আফগানদের জন্য মেডিকেল এবং স্টুডেন্ট ভিসা স্থগিত করেছিল, কিন্তু এটি পুনরায় চালু করার একটি সুযোগ এসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের জন্য তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা একটি বাস্তবিক পদক্ষেপ। আফগানদের জন্য ভিসা চালু করলে বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, যা উভয় দেশের জন্য লাভজনক হতে পারে।
ভারতের জন্য তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি, যদিও ভারতের অবস্থান বেশ সতর্ক। ভারতের দীর্ঘদিনের নীতি ছিল যে, তারা আফগানিস্তানে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের পরে তালেবানকে উপেক্ষা করেছিল। তবে বর্তমানে বিশ্ব যখন তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করছে, ভারতও একে অবহেলা করতে পারে না। এটি তাদের স্বার্থ রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।