২০২৫ সালের ৮ জানুয়ারি, দুবাইয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এবং আফগান তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটি ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এবং একটি তাৎপর্যপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ।
এই বৈঠকে ভারত আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা এক সময় ভারতের জন্য একটি কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই ভারত তালেবানদের বিরোধিতা করছিল, কিন্তু এখন এই পরিবর্তন ভারতীয় কূটনীতির একটি বড় মোড় পরিবর্তন হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা দখল ভারত একটি কঠোর প্রতিক্রিয়া জানালেও, বর্তমানে দেশটি তালেবান সরকারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর পেছনে একটি বড় কারণ হলো আফগানিস্তানকে মধ্য এশিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের প্রয়োজন। ভারত আফগানিস্তানে বেশ কিছু অর্থনৈতিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছিল, কিন্তু তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পর ভারত বেশ কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। আফগান সংকটে ভারতের একাধিক নীতির ব্যর্থতার পর, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের নতুন দিকের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে।
বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি বেশ জটিল এবং বিভিন্ন দেশ তাদের কূটনৈতিক নীতিতে পরিবর্তন আনছে। ভারতের এই পদক্ষেপ সেই পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশের অংশ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যেখানে অর্থনীতি এবং বাণিজ্য অনেক বেশি প্রভাব ফেলছে। তবে ভারত এখন আর পশ্চিমাদের সমর্থন পেতে মরিয়া নয়, বরং আফগানিস্তান এবং অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
এটি ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের একটি নতুন দিক, যেখানে দেশটি নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।