সরকারি তদন্তে বেক্সিমকো গ্রুপের বিপুল ঋণ কারচুপির ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে, যেখানে মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জামানত রেখে প্রতিষ্ঠানটি ২৮ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক, যার পরিমাণ ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। এছাড়া সোনালী, অগ্রণী, রূপালীসহ ১৩টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই বিপুল পরিমাণ ঋণ মঞ্জুর করেছে, যা নিয়ে এখন তদন্ত শুরু হয়েছে।
বৈঠকে উঠে আসে, বেক্সিমকোর অস্তিত্বহীন ১৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে, যা নজিরবিহীন অনিয়মের উদাহরণ। শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, বেক্সিমকোর কিছু প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে ৫০০-৬০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এই অর্থের একটি অংশ শেয়ার বিক্রি থেকে সংগ্রহ করা হবে, বাকিটা সরকারিকভাবে মেটানো হবে।
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এত বিশাল পরিমাণ ঋণ কী ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত করা হবে। বিশেষ করে যেসব ব্যাংক কোনো জামানত ছাড়াই ঋণ দিয়েছে, তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই ঋণ কেলেঙ্কারির মাত্রা এত বড় যে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। ব্যাংকের টাকা জনগণের সম্পদ, তাই এই অর্থ লোপাটের ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। সরকার এখন তার প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের বিষয়ে গভীর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, যা শেষ হলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।