২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়, যা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে ঘটেছিল। এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সরিয়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ নয় বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই পরিস্থিতিতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় হ্যাকিংয়ের ধারা অন্তর্ভুক্ত না করে মামলায় চুরির ধারা দেওয়া হয়, যা মামলাটিকে দুর্বল করে তুলেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সুবিধা দিতেই এটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিআইডি ইতোমধ্যে সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে এবং তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে আতিউর রহমান বিদেশে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, সুইফট পেমেন্ট সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করার কারণে হ্যাকাররা সহজেই এই কাজটি করতে পেরেছে। সেই সঙ্গে, কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশের অভিযোগও রয়েছে। যদিও অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলেও তাঁরা চুরি হওয়া অর্থের ভাগ পাননি। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে মাত্র ৩৪ শতাংশ ফেরত এসেছে। বাকি অর্থ ফেরত পেতে বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করেছে।
দুদক মনে করে, এই মামলার তদন্ত তাদের তফসিলভুক্ত এবং অভিযুক্তরা সরকারি কর্মচারী হওয়ায় দুদকের অধীনে তদন্ত হওয়া উচিত। এ বিষয়ে সিআইডিকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে, তবে এখনো কোনো উত্তর আসেনি। তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে বিশেষজ্ঞরা অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তের সুষ্ঠু সমাধান না হলে দেশের অর্থ পুনরুদ্ধার এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।