েবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংকট নতুন মোড় নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি উভয় পক্ষের জন্য ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দেয়, যা লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও দেশটির সরকার মেনে নিলেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই প্রস্তাবে দক্ষিণ লেবাননের লিতানি নদীর দক্ষিণে কেবল লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের অবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়। অঞ্চলটি থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলি বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবকে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) সম্প্রতি দক্ষিণ লেবাননে ব্যাপক অভিযান চালায়। এতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুর পাশাপাশি তাদের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন প্রস্তাব একটি সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হলেও নেতানিয়াহুর বক্তব্য স্পষ্ট করে যে ইসরায়েল এই প্রস্তাবে রাজি নয়। নেতানিয়াহু ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বলেন, “কাগজে যাই লেখা থাকুক, ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া হবে”। তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও তা মানার নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়”।
অন্যদিকে, মার্কিন দূত আমোস হোচস্টাইন লেবাননের রাজধানী বৈরুতে পৌঁছেছেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে। তার উপস্থিতি স্থায়ী সমাধানের আশাবাদ তৈরি করলেও ইসরায়েলের অনমনীয় অবস্থানের কারণে এই প্রচেষ্টা সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সিএনএন জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় এই সাময়িক যুদ্ধবিরতিকে একটি স্থায়ী সমাধানের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করতে। তবে নেতানিয়াহুর সশস্ত্র অবস্থানের কারণেই এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন।
লেবাননের হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ নেতা নেতানিয়াহুকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, “নিজের নিরাপত্তা সুরক্ষা করতে না পারলে ইসরায়েলিরাই নেতানিয়াহুকে হত্যা করবে”। এমন মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে, দক্ষিণ লেবাননে হাজারো মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এই সংঘাতের মীমাংসা আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও স্থগিত রয়ে গেছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।