২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন পাঠ্যবইগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে ইতিহাস ও ক্রীড়াবিষয়ক পাঠ্যবইয়ে তথ্য পরিবর্তন ও কিছু বিষয়বস্তু বাদ দেওয়ার বিষয়টি নজরে এসেছে।
এবারের সপ্তম শ্রেণির নতুন পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে’ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তবে ২০২২ সালের একই শ্রেণির বইয়ে উল্লেখ ছিল, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে’ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বইয়ে এখনো ৩০ লাখ শহীদের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ‘লাখো’ শব্দটি বাক্যের ছন্দ রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
এছাড়া সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের ‘স্পোর্টস পারসোনালিটি’ অধ্যায় থেকে শচীন টেন্ডুলকার, কাজী সালাহউদ্দিন এবং সাকিব আল হাসানের ছবি বাদ দিয়ে সেখানে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, দাবার কিংবদন্তি রানী হামিদ এবং বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার ছবি সংযোজন করা হয়েছে।
নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’ নিয়ে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। তবে এই অধ্যায়ে শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর তারিখ ভুলভাবে ১৭ জুলাই লেখা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে পিডিএফ সংস্করণে সংশোধন করা হয়।
এনসিটিবি সূত্র মতে, নতুন পাঠ্যবইয়ের জন্য ৪৪১টি বই পরিমার্জন করা হয়েছে। প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানো হলেও শিক্ষাবর্ষের কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো অনেক শিক্ষার্থী সব বই হাতে পায়নি। এনসিটিবি জানিয়েছে, প্রিন্ট হওয়া বইয়ের ভুল সংশোধনের জন্য সংশোধনী পাঠানো হবে এবং নতুন বইয়ের পিডিএফ সংস্করণ এনসিটিবির ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।
নতুন পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে বিতর্ক হলেও এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেছেন, “এবারের পাঠ্যবইয়ের ইতিহাস থেকে অতিবন্দনা বাদ দেওয়া হয়েছে। কাউকে ছোট বা বড় না করে বিষয়বস্তু সংযোজন করা হয়েছে। সবার জন্য উপযোগী একটি পাঠ্যক্রম তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।”
এই পরিবর্তনগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন চিন্তার দুয়ার খুললেও, কিছু অসংগতি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা এখনো রয়ে গেছে।