প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করেছেন যে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যখন জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে বাংলাদেশে জুলাই এবং আগস্টের সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনার জন্য আমন্ত্রণ জানান, তখন অনেকেই সন্দেহ করেছিলেন। অনেকের মতে, এটি ছিল একটি রাজনৈতিক কৌশল, ‘খাল কেটে কুমির আনার ব্যবস্থা হচ্ছে’।
১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে, শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক ভেরিফায়েড আইডি থেকে একটি পোস্টে লিখেছেন, “অনেকের মনে ছিল যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করবে এবং হয়তো এমন প্রতিবেদন দিবে যা আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলির মতো হবে।”
তবে, অধ্যাপক ইউনূস তাঁর সিদ্ধান্তে স্থির ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, হত্যাকাণ্ড এবং সহিংসতার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরই সবচেয়ে উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান। যদিও বাংলাদেশে জানানো হয়েছিল যে, জুলাই-আগস্টে কী ঘটেছিল, কারা হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল, পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী কিভাবে যুক্ত ছিল, তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং নিরপেক্ষ প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
শফিকুল আলম আরো বলেন, “আন্তর্জাতিকভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উপর এক বড় আঘাত এসেছে। আর আওয়ামী লীগ যদি তাদের দলকে পুনর্জীবিত করতে চায়, তবে একমাত্র উপায় হলো—শেখ হাসিনাকে ও তাঁর পরিবারকে প্রত্যাখ্যান করা এবং জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া।”
এছাড়াও, শফিকুল আলম ১৯৯০ সালে সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের পতনের উল্লেখ করে বলেন, “এরশাদ ছিলেন এক দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসক, কিন্তু তিনি রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পেয়ে দুই দশক ধরে বাংলাদেশি রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা এবং তাঁর দলের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি প্রায় সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। তবে, তিনি সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের কারণে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন পেয়েছেন।”
সবশেষে, শফিকুল আলম বলেন, “এখন এটা পরিষ্কার, জাতিসংঘের প্রতিবেদন আর কোনও বিতর্কের সুযোগ রাখেনি।” তিনি মন্তব্য করেন, “দুঃখিত, আপা! এটি শেষ!”