যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল মানুষের জীবনে চরম বিপর্যয় এনে দিয়েছে। প্রচণ্ড এই আগুনের কারণে প্রায় এক লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এখন বাসিন্দারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, কবে আবার তারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে পারবেন।
দাবানলগ্রস্ত প্যাসিফিক প্যালিসেইডস ও ইটন এলাকার বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে বিভিন্ন চেকপয়েন্টে ভিড় করছেন। অনেকেই তাঁদের সম্পত্তি ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে তা জানেন, তবুও শেষ চিহ্নটুকু দেখতে মরিয়া।
জ্যানেল নামে এক নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমি ছবি আর ভিডিওতে সব দেখেছি। আমি জানি, সব শেষ। তবু আমি নিজের চোখে ধ্বংসাবশেষ দেখতে চাই।’’
তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখনো নিরাপদ নয়। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ফায়ার সার্ভিস প্রধান অ্যান্টনি ম্যারোনি জানিয়েছেন, ঝোড়ো বাতাসের কারণে আগুন আবার ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই কারণেই বাসিন্দাদের বাড়ি ফেরার অনুমতি এখনো দেওয়া হয়নি।
ম্যারোনি বলেন, ‘‘লোকজনকে যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের ঘরে ফেরানোর কাজ করা হচ্ছে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’’ ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসের কারণে বৃহস্পতিবারের আগে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা সম্ভব হবে না।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য অনলাইনে তাঁদের ঘরবাড়ির অবস্থা দেখার ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। সিটি কাউন্সিলর ট্র্যাসি পার্ক বলেন, ‘‘দুর্গত মানুষের কষ্ট আমরা বুঝি। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।’’
লস অ্যাঞ্জেলেসের এই দাবানলে এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। তবুও এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত মানুষের অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হচ্ছে না।