কয়েক মাসের স্থিতিশীলতার পর আবারও বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন—এমন অভিযোগে ভারতীয় হাইকমিশনার পবন বাধেকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এক ভাষণে শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘মৃতদেহের ওপর দিয়ে হেঁটে’ ক্ষমতা দখলের অভিযোগ এনেছেন। তার এই বক্তব্য বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনার এই উসকানিমূলক মন্তব্যের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জাদুঘরসহ একাধিক স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ‘গভীর উদ্বেগ ও হতাশা’ প্রকাশ করেছে এবং ভারতে অবস্থান করে দেওয়া তার বক্তব্য সুস্থ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছে।
এদিকে ভারত সরকার বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে ‘গুরুতর অপরাধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবোধকে যারা ধারণ করে, তারা এই ঐতিহাসিক স্থানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন।
বাংলাদেশ সরকারের দাবি, শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে তার বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টা করছেন, যা শত্রুতাপূর্ণ আচরণের শামিল। ঢাকার পক্ষ থেকে ভারত সরকারকে তার উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে বিএনপি বিরল ঐক্য দেখিয়ে এই পরিস্থিতির নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে, বর্তমান অস্থিরতা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। দলটির পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, এ ধরনের ঘটনাগুলো দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
পরিস্থিতির অবনতি রোধে ভারত কী পদক্ষেপ নেয়, সেটি এখন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সরকার ভারতের প্রতিক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।