কানাডার লিবারেল পার্টির প্রধান এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোমবার (৬ জানুয়ারি) পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেবা করার সুযোগ পাওয়ায় আমি গর্বিত। আমি করোনা মহামারির সময় সেবা করেছি, গণতন্ত্রকে মজবুত করেছি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতির জন্য কাজ করেছি। আমি একজন লড়াকু মানুষ।”
ট্রুডো আরও বলেন, “২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই কানাডার স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছি। মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে শক্তিশালী করার জন্য আমার প্রচেষ্টা ছিল।”
এদিকে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “কানাডার অনেক মানুষ আমাদের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হতে চায়। কানাডাকে টিকিয়ে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি এবং ভর্তুকির চাপ আর বহন করবে না। ট্রুডো এটি জানতেন এবং পদত্যাগ করেছেন।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হলে শুল্ক থাকবে না, করও কমে যাবে। রাশিয়া ও চীনের হুমকি থেকেও তারা সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। একত্রে আমরা একটি মহান জাতি গড়ে তুলতে পারি!”
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতা গ্রহনের প্রথম দিনেই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি কানাডা থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এর ফলে গত ডিসেম্বরেই ট্রুডো যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যান এবং ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন। সে সময় ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব দেন, যা ট্রুডোর প্রশাসন “মজার ছলে বলা” মন্তব্য বলে উড়িয়ে দেয়। তবে ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর থেকেই কানাডাকে ফের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার কথা বললেন ট্রাম্প।
ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর ট্রাম্পের এমন মন্তব্য কানাডায় নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন জটিলতা তৈরি করতে পারে। জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি কীভাবে এগোয়, তা এখন দেখার বিষয়।