২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অস্থির, কিন্তু পরিবর্তনশীল বছর। এ বছর ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই গণ-আন্দোলনের অন্যতম শক্তি ছিল বিভিন্ন সময় উচ্চারিত স্লোগান, যা শুধু আন্দোলনের শক্তি জোগায়নি বরং ভবিষ্যতের জন্য হয়ে উঠেছে অনুপ্রেরণা।
তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার
শেখ হাসিনার একটি বিতর্কিত মন্তব্যের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজপথে ছড়িয়ে পড়ে এই স্লোগান। ছাত্র-জনতার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়, “তুমি কে আমি কে? রাজাকার, রাজাকার।” এই স্লোগান আন্দোলনের গতি ত্বরান্বিত করে এবং ছাত্রদের সংগ্রামী মনোভাব প্রকাশ করে।
বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর
রাজপথে পুলিশের গুলিতে শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগের পর এই স্লোগানটি হয়ে ওঠে প্রতিবাদের প্রতীক। সাহসী ছাত্রদের রক্তে লেখা এই স্লোগান জাতিকে উজ্জীবিত করে।
নাটক কম করো পিও
শেখ হাসিনার এক বক্তৃতার সময় আবেগপ্রবণ কান্না নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। এই বাক্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজপথ পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
ইন্টারনেট বন্ধ করি নাই, একা একা বন্ধ হয়ে গেছে
আন্দোলনের সময় সরকারের ইন্টারনেট বন্ধ করার ঘটনাকে অস্বীকার করে দেওয়া মন্তব্যটি পরিণত হয় বিদ্রূপের ভাষায়। এটি জনগণের হতাশা এবং সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি অবিশ্বাস প্রকাশ করে।
জন্মভূমি অথবা মৃত্যু
কিউবার চে গেভারার বিখ্যাত উক্তিটি আন্দোলনে নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। এটি রাজপথে ছাত্র-জনতার প্রতিজ্ঞা হিসেবে উচ্চারিত হয়।
পানি লাগবে পানি?
আন্দোলনকারীদের ক্লান্তি কাটাতে পানি বিতরণ করতে গিয়ে শহীদ হন মীর মুগ্ধ। তার এই কথাটি আন্দোলনের এক অসামান্য স্মারক হয়ে ওঠে।
শোনো মহাজন, আমরা অনেক জন
শূন্য ব্যান্ডের বিখ্যাত গানের এই লাইনটি আন্দোলনকারীদের ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠে।
জুলাই বিপ্লব শুধু ক্ষমতার পট পরিবর্তনের নয়, এটি ছিল ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ, সাহস ও ঐক্যের প্রতীক। প্রতিটি স্লোগান এই ইতিহাসের সাক্ষী, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহসী লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে।