বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলির ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতির দুই ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ও তুহিন আহমেদ রাসেলের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সদর উপজেলার লতিবাবাদ গ্রামের বিএনপি কর্মী তহমুল ইসলাম। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলাটি তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আন্দোলন দমন এবং গণহত্যার উদ্দেশ্যে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা হয়। আন্দোলন দমন করার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে আসামিরা বিভিন্নভাবে নির্দেশনা ও অর্থ সরবরাহ করে। কিশোরগঞ্জের স্টেশন রোডে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা চালিয়ে গুলি, গ্রেনেড এবং ককটেলের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়। এতে মামলার বাদীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিশোরগঞ্জে প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। এই প্রথম সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে কোনো মামলায় আসামি করা হলো। মামলায় শেখ হাসিনা ১ নম্বর, শেখ রেহানা ২ নম্বর এবং আবদুল হামিদ ৩ নম্বর আসামি। মামলার বাদী তহমুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ন্যায়বিচারের জন্য এই মামলা করেছেন।
এদিকে, স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এ মামলা নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটন করা হবে।