ভারতীয় ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি এবং মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে পরিবারকে সঙ্গে রাখার সুবিধা দীর্ঘদিন ধরে চালু ছিল। বিরাট কোহলির অধিনায়কত্বকালে ২০১৮ সালে এই নিয়মের সূচনা হয়। এতে খেলোয়াড়রা তাদের পরিবারকে সফরের সময় কাছে রাখতে পারতেন, যা মাঠে তাদের মনোযোগ বাড়াতে সহায়ক ছিল।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এই সুবিধার ওপর কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সফরের সময়সীমা ৪৫ দিনের বেশি হলে খেলোয়াড়রা পরিবারকে সঙ্গে রাখতে পারবেন সর্বোচ্চ ১৪ দিন। তবে সফরের প্রথম দুই সপ্তাহ পরিবার সঙ্গে রাখার সুযোগ থাকবে না। আর ৪৫ দিনের কম সময়ের সফরে পরিবারকে পাশে রাখার সুযোগ থাকবে মাত্র ৭ দিন।
সাম্প্রতিক সময়ে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধিনায়ক রোহিত শর্মা, কোচ গৌতম গম্ভীর, প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার এবং বিসিসিআই কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এই বৈঠকে বোর্ড জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস এবং ম্যাচ চলাকালে স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করার সুবিধাও সীমিত করা হচ্ছে।
বিসিসিআই এখন থেকে খেলোয়াড়দের পরিবার থাকার জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। তবে পরিবারের যাতায়াত খরচ বহন করতে হবে খেলোয়াড়দের। একইসঙ্গে প্র্যাকটিসে টিম বাস ব্যবহারের বাধ্যবাধকতাও আরোপ করা হয়েছে।
কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছেন, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়ের পরিবার নিয়ে আলাদা মতামত থাকতে পারে। কেউ পুরো সফরে পরিবারকে চায়, কেউ চায় আংশিক সময়। তবে যেটি ভারতের ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে, সেটিই বেছে নিতে হবে।’
খেলোয়াড়দের মানসিক স্থিতি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই ধরনের নিয়ম ব্রাজিল ফুটবল দল ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকায় প্রয়োগ করেছিল, যা তাদের সাফল্যের মাইলফলক স্থাপন করেছিল। তবে এমন নিয়ম সবসময় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। ২০১২ সালের অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়ার সাঁতারুরা এই নিয়মের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন।
এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে এটি ভারতীয় ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স এবং মনোযোগ কতটা প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে।