তালেবান সরকার আফগানিস্তানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) পরিচালিত সকল কার্যক্রমে নারীদের কাজ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। দেশটির অর্থনীতি মন্ত্রণালয় থেকে গত রবিবার রাতে এই নির্দেশনা জারি করা হয়। নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে নারীদের অধিকার সীমিত করার ধারাবাহিকতায় এটি নতুন সংযোজন। এর আগে ষষ্ঠ শ্রেণির পর মেয়েদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা, বেশিরভাগ চাকরিতে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং পাবলিক স্থান যেমন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র থেকে তাদের বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি চিঠিতে বলা হয়েছে, নারীরা প্রশাসনের নির্ধারিত পোশাকবিধি অনুসরণ করে না, তাই তাদের এনজিওতে কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানে ত্রাণ কার্যক্রমের একটি বড় অংশ পরিচালনা করেন নারী কর্মীরা।
জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টম ফ্লেচার জানিয়েছেন, মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ কর্মীদের ওপর ক্রমাগত বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া এই কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।
বর্তমানে আফগানিস্তানের লাখ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অন্যান্য মানবিক সংকটে ভুগছে। এমন সময়ে নারীদের এনজিও কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেশটির সংকট আরও ঘনীভূত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে এবং মানবিক কার্যক্রম চালু রাখতে নারীদের অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞা শুধু নারী কর্মীদের নয়, আফগানিস্তানের মানবিক সহায়তার পুরো কাঠামোকেই বিপর্যস্ত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।