দেশি-বিদেশি গন্তব্যে বিমান ভ্রমণের টিকিটের দাম বেড়ে গেছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিমানযাত্রায় আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ফলে এই বাড়তি খরচের বোঝা পড়েছে যাত্রীদের কাঁধে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় রুটেই নতুন এই শুল্ক কার্যকর হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানযাত্রায় আবগারি শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক রুটে, বিশেষ করে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে শুল্ক ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং এশিয়ার অন্যান্য গন্তব্যে ২ হাজার থেকে বেড়ে আড়াই হাজার টাকা হয়েছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় যাত্রার ক্ষেত্রে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার টাকায়।
বিমান সংস্থাগুলোর প্রতিক্রিয়া
দেশীয় বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো এই শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম জানান, বছরের মাঝপথে এমন শুল্ক বৃদ্ধি ভোক্তা এবং ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, ‘‘আকাশপথ এখন আর বিলাসী সেবা নয়; এটি প্রয়োজনীয় একটি সেবা হয়ে উঠেছে। তাই এই শুল্ক প্রত্যাহার করা উচিত।’’
এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী ইমরান আসিফ এই শুল্ক বৃদ্ধিকে ‘‘৪০ শতাংশ বৃদ্ধি’’ বলে উল্লেখ করে জানান, ‘‘অর্থবছরের মাঝপথে এমন সিদ্ধান্ত দেশের বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’’
ভোক্তাদের ভোগান্তি
শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভ্রমণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ করে পরিবার নিয়ে ভ্রমণ করা অনেকের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডগামী যাত্রীদের জন্য টিকিটে ৫০০ টাকা বেশি শুল্ক যোগ হয়েছে। চারজনের একটি পরিবার থাইল্যান্ডে যেতে চাইলে এখন তাঁদের আগের তুলনায় ২ হাজার টাকা বেশি খরচ হবে।
তবে যাঁরা শুল্ক বৃদ্ধির আগে অগ্রিম টিকিট কেটেছেন, তাঁরা এই নতুন শুল্কের আওতায় পড়ছেন না। বিমান সংস্থাগুলোর মতে, আগাম টিকিটে শুল্ক বৃদ্ধি আরোপ করা বাস্তবসম্মত নয়।
পরিস্থিতি আরও কঠিন হওয়ার আশঙ্কা
শীত মৌসুমে পর্যটনের চাহিদা বেশি থাকলেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভারতের পর্যটন ভিসা বন্ধ থাকার কারণে দেশীয় বিমান সংস্থাগুলো এরই মধ্যে চাপের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে টিকিটের দাম আরও বাড়ায় যাত্রীদের ভ্রমণের খরচ বেড়ে গেছে।
বিমান সংস্থাগুলোর মতে, এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে যাত্রীরা বিকল্প ভ্রমণপথ বেছে নিতে বাধ্য হতে পারেন, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের বিমান খাতের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।