২০২৪ সাল ছিল আওয়ামী লীগের জন্য ভয়াবহ এক বছর। টানা চারবার ক্ষমতায় থাকা দলটি গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারায়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। দলের শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে চলে যান কিংবা বিদেশে পালিয়ে যান। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ওপর নামে দমন-পীড়ন। এতে দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে।
২০২৫ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়েছে, তারা আবারও সংগঠিত হয়ে মাঠে নামবে। দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এবং শুভ-কল্যাণময় সময় প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে তারা নতুন পরিকল্পনা করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শক্তির সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে দলটি।
দলটির নেতারা বলছেন, তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে চাঙা করতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। হারানো জনসমর্থন পুনরুদ্ধার এবং সংগঠনের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে দলের নেতাকর্মীদের পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা জানান, “২০২৫ সাল আমাদের জন্য পুনর্গঠনের বছর। জনগণের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে আমরা নতুন উদ্যমে কাজ করব।”
আওয়ামী লীগ মনে করছে, তাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র কাজ করেছে। এ কারণে দলটি এবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। ইতোমধ্যে একটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য তুলে ধরছে।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, “আমরা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জঙ্গিবাদ বিস্তারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে অবহিত করেছি। বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে— এটি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি।”
দলের নেতারা জানিয়েছেন, চলতি মাসেই তারা বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সংগঠনকে সক্রিয় করতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রবাসী নেতাকর্মীদের সঙ্গেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে শেখ হাসিনা কথা বলেছেন।
নতুন বছরে আওয়ামী লীগ তাদের ঐতিহ্য ও শক্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দলটি আবারও রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হতে চায়।
আওয়ামী লীগ ২০২৫ সালে রাজনৈতিক পুনর্গঠন এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। দলটির শীর্ষ নেতাদের মতে, এটি তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।