রাজধানীবাসির গলার কাটা হয়ে উঠা অটোরিকশা নিয়ে এবার কঠোর অবস্থানে গেলো পুলিশ। এলাকার ছোট অলিগলি ছাড়া প্রধান কোন সড়কে চলতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ। যদিও সত্যি তা কিভাবে মানানো হবে চালকদের তা জানা নেই সাধারণ মানুষের।
বাংলাদেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বা ইজিবাইক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শহরতলি ও গ্রামীণ অঞ্চলে সহজে ও দ্রুত যাওয়া যায় বিধায় অনেকেই এই অটোরিকশায় চড়তে পছন্দ করেন। সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তবে এই যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার দেশের সড়ক নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। সাধারণ মানুষ অটোচালকদের অনিয়মে এখন চরম বিরক্ত হয়ে উঠেছে।
অনুমোদনহীন অটোরিকশার সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, যা ট্রাফিক জ্যাম ও সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। কয়েক বার নিষেধাজ্ঞা দেয়ার চেষ্টা করেও তা সফল করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর এবার কঠোর অবস্থানে পুলিশ।
সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবার নড়েচড়ে বসেছে। প্রধান সড়কে কোন ভাবেই আর চলতে দেয়া হবেনা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে তা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সেটা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক রা কি মেনে নিবে কিনা তা নিয়েও হচ্ছে আলোচনা।
সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশে তিন দিনের মধ্যে রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এর প্রতিবাদে চালকরা আন্দোলনে নামেন। এমন পরিস্থিতিতে রিকশাচালক, মালিক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ডিএমপি একটি বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে ডিএমপি’র বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি ও মালিক-চালকরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ২৭ নভেম্বর রাজধানীর প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি। তবে ভেতরের সড়কগুলোতে এই যানবাহন পূর্বের মতোই চলবে। বুধবার ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এক বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এই নির্দেশনা দেন।
চেম্বার আদালতের রায়ের আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান কমিশনার। তিনি বলেন, “প্রধান সড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। তবে নতুন কোনো অটোরিকশা যাতে রাজধানীর সড়কে না নামে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
তার মানে নতুন করে অটোরিকশার অনুমোদন দেয়া হবে না। তবে এসব রিকশার কোন কাগজপত্র না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। তাই সবার আগে লাইসেন্স নিশ্চিত করার আহ্বান জানান সচেতন নাগরিকরা।